এখন পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ এই সমস্যার শিকার। মাজার ব্যথা কোনো বয়স মানে না। তাছাড়া বর্তমান লাইফস্টাইল – কম্পিউটারে বসে দীর্ঘক্ষণ কাজ, কখনো বা বাচ্ছাদের ভিডিও গেম, আবার ঘন্টার পর ঘন্টা ড্রাইভিং, ভারি জিনিস বহন এই সব কিছু জীবনের সাথে অতপ্রত ভাবে জড়িয়ে পড়ায় মাজার ব্যাথা বাধ্যতামূলক করে তুলেছে। জীবন এদের থেকে বেরতে চাইলেও এরা জীবন থেকে বের হবে না। তাই এদেরকে জীবনের সাথে জুড়েও কীভাবে একটু সুস্থতার মুখ দেখা যায় তা আমরা আলোচনার মাধ্যমে বিস্তারিত জেনে নবো।
তাহলে দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক এই সমস্যার প্রকৃত কারণ, ওষুধ, দূর করার উপায় এবং কীভাবে এই নিশ্চিত ব্যাথা থেকে বরাবরের জন্য নিরাময় সম্ভব:
- মাজার ব্যাথার কারন
- মাজার ব্যাথার লক্ষণ সমূহ
- মাজার ব্যাথার নিরাময়ের ওষুধ
- মাজার ব্যাথা সারানোর উপায়
- কোমর ব্যথার ব্যায়াম
অপেক্ষার ইতি টেনে আসুন উপরোক্ত বিষয়গুলির দেখে নেওয়া যাক।
মাজার ব্যাথার কারন:
আগেই বলেছিলাম দীর্ঘক্ষণ একভাবে বসা এই ব্যাথার উদ্ভবের অন্যতম কারণ। সেটা কম্পিউটারের কাজ হক বা অফিসের কাজ অথবা দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালানো। এই সব জায়গায় ঠিক করে না বসলে তা ব্যাথার সৃষ্টি করে। এছাড়াও শুয়ে বই পড়া ও অতিরিক্ত ভারি জিনিস তোলা যা কিনা কোমরের ওপর চাপ তৈরি করে এবং অসম্ভব যন্ত্রণার উৎপত্তি ঘটায়। এমনকি চেয়ার টেবিলে বসার সময় খেয়াল করে বসতে হবে এদিক ওদিক হলেই তা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া বেকবনে মাংসপেশির উদ্ভব আর পায় মোচকানোতে কোমোরের ওপর চাপ বাড়ায় তা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মাজার ব্যাথার লক্ষণ সমূহ:
ঘুম থেকে ওঠার পর মেরুদন্ড থেকে কোমরে টান লাগে যা নীচু হয়ে কিছু নিতে বা শুয়ে থাকলে ওঠার সময় তীব্র হয়ে ওঠে।আবার অনেকক্ষণ দাঁড়ানোর পর যদি দেখেন পা থেকে কোমর পর্যন্ত টান অনুভব করছেন তা নিঃসন্দেহে কোমরের ব্যথার উদ্ভব। হঠাৎ হঠাৎ পা টেনে ধরা বা পায়ের পেশি দূর্বল হয়ে যাওয়া, বেশি ক্ষণ দাঁড়াতে বা বসতে না পারা, খুব তাড়াতাড়ি ঝীনঝীন ধরা এই সবই হল কোমরের ব্যাথার লক্ষণ সমূহ।
মাজার ব্যাথা নিরাময়ের ওষুধ:
মাজার ব্যাথা হলে তা খুব সামান্য হিসাবে নিয়ে তাতে নিজে থেকে ডাক্তারি করতে যাবেন না। তেমন হলে ক্যালসিয়ামের অভাব জনিত কারণে হলে তা খেতে পারেন কিন্তু সেটা ডাক্তারের পরামর্শে। এছাড়াও ভিটামিন বি, এবং ভিটামিন ডি খুব জরুরি এক্ষেত্রে। অনেকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করাতে পারেন। তাতেও ফল মেলে অল্প দেরীতে কিন্ত সম্পূর্ণ সেরে যাবে তাতে।
মাজার ব্যাথা সারানোর উপায়:
কিছু সাধারণ জিনিস যা অনুসরণ করলে অনেক আরাম মিলবে। ধরুন যদি অফিসে কাজের সময় মাঝেমাঝে উঠে পায়চারি করা যায় বা যে কোনো কাজে বসে করার হলে একটা সময় অন্তর ব্রেক নেওয়া। নিয়ম মতো অন্তত ছয় থেকে সাত ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস। এছাড়াও অতিরিক্ত স্ট্রেস নেওয়া যাবে না। একটি সাস্থ্য সচেতন খাদ্যের চাট মেনে চলার চেষ্টা করা আবশ্যক। সেই খাদ্যের চাটে শাক সবজি ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার যাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে সেইদিকে নজর রাখতে হবে। সঠিক প্রোটিন যুক্ত খাবার রোজ নিয়ম করে খাওয়া এবং এর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ জল খাওয়ায় কিন্তু দরকার।
কোমর ব্যথার ব্যায়াম:
ঘরোয়া অনেক ব্যায়াম আছে যা কোমরের ব্যাথা সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। পা ও কোমর স্ট্রেচিং, নিয়মিত হাঁটা, যোগ ব্যায়াম অর্থাৎ মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে হাতের ওপর ভর দিয়ে কোমর পর্যন্ত তোলা, সোজা হয়ে বসে পা মেলে হাটুতে নাক ঠেকানো ইত্যাদি। এই সমস্ত ব্যায়াম একদিন নয় রোজ নিয়মিত করলে কোমর ব্যথার থেকে চিরকালের জন্য মুক্তি মিলবে ও শরীর সুস্থ থাকবে।
যত দিন যাচ্ছে শরীরের ব্যথা বেদনা কিন্তু বেরেই চলেছে। মাজার ব্যাথা আজ এক অতি পরিচিত একটি রোগ আমাদের কাছে এবং দিনের পর দিন এটি ভয়াবহ রূপ ধারন করছে। তাই প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় শরীরের পেশির জন্য ব্যয়াম করতেই হবে। জীবনকে উপভোগ করতে গেলে সুস্থ জীবন আগে গড়ে তুলতে হবে। কারণ আমরা সবাই জানি সাস্থ্যই সম্পদ।
এই পোষ্টটি আপনাদের সুবিধার্থের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে । আশা করি উপকৃত হবেন। কেমন লাগল অবশ্যই জানান কমেন্টে। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। আমাদের পাশে থাকুন।
ধন্যবাদ।