ইমা এলিস/ বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে পৌঁছায়নি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই কথিত আলোচনার প্রস্তাব। এ ধরনের আলোচনার কোন বার্তা পাননি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতারা। গত মঙ্গলবার (২ মে) ভার্জিনিয়ার রিটজ কার্লটন হোটেলে বাংলাদেশি প্রবাসীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা আয়োজন করা হয়। ওই সময় বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বিক্ষোভকারী বিএনপির নেতাদের আলোচনার আহবান জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করলেও প্রকৃতপক্ষে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কেউ এ ধরনের কোন আলোচনার প্রস্তাব পাননি। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিরা করছে। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
‘প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার আহবানে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকরা’ গত বুধবার (৩ মে) দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত উক্ত খবরকে ডাহা মিথ্যাচার বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা জানান, ভার্জিনিয়ার রিটজ কার্লটন হোটেলের সামনে বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে সরকারি কোন কর্মকর্তা বা দলের কেউই তাদের কাছে এ ধরনের কোন প্রস্তাব নিয়ে আসেননি। অথচ সরকারি সংস্থার পরিবেশিত সংবাদে এভাবে মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে।
বিশ্ব ব্যাংকের সামনে ও রিটজ কার্লটন হোটেলের সামনে দু’দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজক ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির সভাপতি হাফিজ খান সোহায়েলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান মঙ্গলবার (২ মে) দুপুর ২টার দিকে রিটজ কার্লটন হোটেলের সামনে ভার্জিনিয়া বিএনপির সদস্য সচিবসহ তারা তিনজন ব্যানার লাগাতে গেলে ছাত্রলীগ নামধারী অভি খান ও জাহিদ হাসানসহ বেশ কয়েকজন কর্মী অতর্কিতভাবে বিএনপি কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ব্যানার কেড়ে নেবার চেষ্টা করেন। চড়াও হয়ে তারা উপর মারধর শুরু করলে ভার্জিনিয়া বিএনপির সদস্য সচিব মোহাম্মদ তোফায়েল গুরুতর আহত হন। তাকে তাৎক্ষনিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাবার সময় পুলিশ নিউ ইয়র্ক থেকে আগত কথিত ছাত্রলীগ অভি খানকে গ্রেপ্তার করেন এবং জাহিদ হাসানসহ অন্যরা পালিয়ে যান। দুপুরের সেই ঘটনার পর উভয় গ্রুপ বিশেষ করে বিক্ষোভকারীদের কাছাকাছি মিডিয়াকর্মীদেরও যেতে দেননি পুলিশ। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা/৭টা পর্যন্ত বিএনপির কর্মীরা সেখানে বিক্ষোভ করেন। ওই সময় পর্যন্ত সরকারি কোন কর্মকর্তা বা দলের কেউই তাদের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার কোন প্রস্তাব নিয়ে আসেননি।
হাফিজ খান সোহায়েল আরও বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের সামনে এবং রিটজ কার্লটন হোটেলের সামনে দু’দিনেই ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির উদ্যোগেই সেসব কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তাদেরকে সহযোগিতা করেন ভার্জিনিয়া ও ম্যারিল্যান্ড বিএনপির নেতা-কর্মীরা। প্রধানন্ত্রীর কোন প্রস্তাব আসলে আগে তারাই জানতো বলে উল্লেখ করেন সোহায়েল। প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার আহবানে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকরা’ এ ধরনের মিথ্যাচার ও আজগুবি খবরের তিনি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ আনিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা ও কেন্দ্রীয় নিবাহী কমিটির সদস্য জিল্লুর রহমান জিল্লু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার কোন প্রস্তাব বা আহবান আমরা পাইনি। আমাদের সাথে আলোচনার প্রয়োজন নেই। যেখানে আলোচনা করলে সমস্যার সমাধান হবে, দেশ ও জাতি উপকৃত হবে, সেখানে আলোচনা করুন যদি সত্যিই আলোচনার ইচ্ছা থাকে। বাহবা কুঁড়ানোর রাজনীতি এখন মানুষ ঠিকই বোঝে। তিনি আলোচনার বিষয় নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা ও কেন্দ্রীয় নিবাহী কমিটির অপর সদস্য গিয়াস আহমেদ বলেন, এই আওয়ামী সরকার বাংলাদেশের গনতন্ত্র, ভোটের অধিকার, বাক স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার হত্যা করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মান সম্মান এবং স্বাধীনতার মুলমন্ত্র ধংস করেছে। সেই কারণে প্রবাসী বাংলাদেশীরা শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র আগমন উপলক্ষে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। দুই দিনের সেই বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী পিছনের দরজা দিয়ে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের এক দফা এক দাবি। ‘তত্বাবধায়ক সরকার’-এর দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত যেখানেই হাসিনা সেখানেই প্রতিরোধ চলবে।বাসস যে খবর প্রচার করেছে তা সম্পুর্ণ ভুয়া ও মিথ্যা। আমি উক্ত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমরা কি আলোচনা করবো। তিনি আলোচনার বিষয় নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
সাবেক ছাত্রনেতা ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী পারভেজ সাজ্জাদ বলেন, তিনি ভার্জিনিয়ার রিটজ কার্লটন হোটেলে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনার কোন প্রতিনিধিকে বার্তা নিয়ে আসতে দেখি না। তিনি কার দ্বারা এবং কীভাবে বিএনপি নেতাদের কাছে আলোচনায় বসার জন্য খবর পাঠিয়েছেন তা কারওই বোধগম্য নয়। অবৈধ এ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব পেলেও কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমতি ব্যতিরেকে আমরা বসার কোন ব্যবস্থাই করতাম না। প্রবাসীদের নেতাদের সাথে আলোচনায় না বসে সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। এরপর বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিরোধীদলের অংশগ্রহনের সুযোগ দিন। তিনিও প্রকাশিত উক্ত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ও মূলধারার রজনীতিবিদ আক্তার হোসেন বাদল বলেন, বর্তমানকালের সেরা স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা বিএনপির নেতা-কর্মীরা কফি আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এটা শুনলেই হাসি পায়। শুধু আমি না এটা কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না। কখন কোথায় এবং কিভাবে আলোচনার প্রস্তাব পাঠিয়েছেন এবং কার কাছে প্রকাশিত সংবাদে তা স্পষ্ট নয়। এতেই বোঝা যায় যে একটি ডাহা মিথ্যাচার। প্রতিশ্রুতি রক্ষায় তার আগের রেকর্ড খারাপ। তিনি প্রতিশ্রুতি রাখেন না। আমাদের দাবি অত্যন্ত স্পষ্ট, শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো দেখতে চাই। তত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে অবাধ ও সূষ্ঠ নির্বাচনের আয়োজন করুন। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী জনগণ আর শেখ হাসিনার ক্ষমতা দেখতে চায় না। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের উপর থেকে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন এবং আমরা তারেক রহমানকে বাংলাদেশ ফিরিয়ে নিতে চাই। বিরোধী দলের মানুষ হত্যা বন্ধ করুন, আমরা চাই অবাধ ও জোড়া বিচার। সকল সাংবাদিককে মুক্ত করুন এবং তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিন।
ইন্টারস্টেট বিএনপির সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম বলেন, অনেক মিথ্যাচার দেখেছি কিন্তু এ রকম মিথ্যাচারিতা কখনও দেখি নাই। প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসার প্রস্তাব কাকে এবং কীভাবে দিয়েছেন তা বিএনপি নেতাদের বোধগম্য নয়। আমরা চাই যেহেতু তিনি পরবর্তী সফরে লন্ডনে যাচ্ছেন, সেখানে গিয়ে আমাদের চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করুক। তাহলেই বুঝবো তাঁর উদারতা কতটুকু। এভাবে মিথ্যাচার করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করে কোন লাভ হবে না। কারণ জনগণ তার চালাকি বুঝে ফেলেছে। এসব করে আর লাভ নেই। এখন যাবার সময় হয়েছে। মান-সম্মান নিয়ে কেটে পড়ুন, সেটাই ভালো হবে আপনার জন্য।
স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আবদুস সবু্র বলেন, এটা একটি ঠাহা মিথ্যা কথা। এমন উদারতার কথা কখনই শুনি নাই। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার কাছে এর চেয়ে আমরা আর কি আশা করতে পারি।
সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক (যুগ্ম-সম্পাদক মর্যাদায়) ও স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক সাবেক ছাত্রনেতা মাকসুদুল হক চৌধুরী বলেন, আমরা কোন দাওয়াত পায়নি, যারা হাতে তজবি এবং মাথায় হিজাব দিয়ে জাতির সাথে প্রতারণা করে তাদের পক্ষে সবই সম্ভব। যারা দিনের ভোট রাতে করে তাদের কাছে মিথ্যা ছাড়া ভাল কিছু আশা করাটা অবান্তর, আর তাছাড়া কোন অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর সাথে কোন যুক্তিতে আমরা কথা বলব? আমাদের একটাই দাবি পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। জনগনের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া হোক।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ আহমদ এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইলিয়াছ খান বলেন, আমরা বা বিএনপির কোন নেতা কেউই প্রধানমন্ত্রীর এরকম কোন আমন্ত্রণ পাইনি। এটি ডাহা মিথ্যা কথা। আমরা বলতে চাই আমাদেরকে চা পানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আমাদের দাবি দাওয়া নতুন করে শোনার কি আছে। দেশে বিদেশে আমাদের দাবি পরিষ্কার। এটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এই মুহুর্তে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ ত্বত্তাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেডে নিরপেক্ষ নির্বাচন, সাবেক তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী আপোষহীন দেশনেত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, সারা বাংলাদেশে আটককৃত সকল বিএনপির নেতাকর্মীদের সকল রাজনৈতিক মিথ্যা ও সাজানো মামলা প্রত্যাহার করুন, আগামীর রাষ্ট্রানায়ক দেশনায়ক তারেক রহমানকে তার নিজ দেশে যাওয়ার যত বাধা রয়েছে তা দূর করে তার দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করার ব্যবস্থা করা। আওয়ামীলীগ সব সময় মিথ্যার রাজনীতি করে। আমরা জানি ক্ষমতা দখলকারী অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই খুব সুন্দর করে সাজিয়ে ঘুচিয়ে মিথ্যা কথা বলেন। তিনি চেহারায় দুঃখি দুঃখি ভাব নিয়ে সুন্দর করে অভিনয় করে কথা বলার সময় আবেগী টানে ডাহা মিথ্যা কথা বলেন। সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য তিনি তার সংবর্ধনা সভায় অবলীলায় এরকম একটি মিথ্যা কথা বলেছেন। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এসে একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এরকম মিথ্যা কথা বলার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
জর্জিয়া বিএনপির সভাপতি নাহিদুল খান সাহেল বলেন, গত ১ ও ২ মে ২০২৩ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে বিশ্ব ব্যাংক ও রিজ কার্লটন ওয়াশিংটন হোটেলের সামনে গুমখুন, বিচার বর্হিভূত হত্যা বন্ধ ও তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে কনসার্ন সিটিজেন অফ বাংলাদেশ’ নামক একটি সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। ১ মে তারিখে বিশ্ব ব্যাংক এর সামনে সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাষ্ট্র হতে পাঁচ শতাধিক নেতা কর্মি যোগ দেয় ও তাহারা শেখ হাসিনা ও তার এক নায়কতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়া শুরু করে। দ্বিতীয় দিনে ওয়াশিংটন রিজ কার্লটন এর সামনে একইভাবে ‘কনসার্ন সিটিজেন অফ বাংলাদেশ’ নামক সংগঠনটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করাকালীন সময়ে বেলা ২টার সময়ে রিজ কার্লটন হোটেলের সামনে থেকে ১০/১৫ জনের একটি দল সড়কের অপর দিকে ব্যানার স্হাপনকারি কয়েকজনকে আক্রমণ করে ও ভার্জিনিয়া বিএনপির সদস্য সচিব তোফায়েল আহমেদকে মারাত্মক ভাবে আহত করে। পরে স্হানীয় একটি হাসপাতালে অপারেশন করে তোফায়েল আহমেদের ভেঙে যাওয়া হাড় জোড়া দেয়া হয়।
পেনসিলভেনিয়া ষ্টেট বিএনপির সভাপতি শাহ ফরিদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটা গনতান্তিক রাষ্ট্র, বাংলাদেশে বর্তমানে ফ্যাসিবাদী শাসক। যুক্তরাষ্ট্র কখনো কোন ফ্যাসিবাদী শাসককে সমর্থন করে না। তার ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিবাদী শাসক হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও কোন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করে না। যেভাবে গনতন্ত্র সম্মেলনেও হাসিনাকে আমন্ত্রন জানানো হয়নি। হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্হানকালে বহু চেষ্টা করেও বাইডেন প্রশাসনের কোন ব্যাক্তির সাথে দেখা করতে পারে নাই। তাতেই বুঝা যায় হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন আমন্ত্রন পায় নাই। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হাসিনা যেভাবে বিষেধাকার করে যাচ্ছে- তাতে আমাদের বাংলাদেশের ক্ষতি করাই হলো ফ্যাসিবাদী শাসক হাসিনার উদ্যেশ্য । হাসিনার এই উদ্যেশ্যকে সফল হতে দেওয়া যাবে না।
নিউ ইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির আহবায়ক অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান বলেন, এ ধরনের মিথ্যাচার করে এখন আর কোন লাভ নেই। এখন ব্যাগ ব্যাগেজ গোছানোর সময়। এসব মিথ্যাচার করে জনগনকে ধোকা দিয়ে কোথায় পালাবেন সেই চিন্তা করুন। তিনিও প্রকাশিত উক্ত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
নিউ ইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোতাহার হোসেন বলেন, রাতের ভোটে অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোন আমন্ত্রণপত্র বিএনপি প্রত্যাশা করে না বা গ্রহণও করবে না। তাই শেখ হাসিনা এসব মিথ্যাচার করে মানুষের নজর কাড়তে চাচ্ছেন। এখন আর সেই সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রিটজ কার্লটন হোটেলের বাইরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিল একদল বিএনপি-জামায়াত সমর্থক। সরকারপ্রধান তাদের আলোচনার আহ্বান জানালে তারা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান। মঙ্গলবার (২ মে) ওই হোটেলের হলরুমে বাংলাদেশি প্রবাসীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
খবরে আরও বলা হয় পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার এম নজরুল ইসলাম এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সমর্থকদের সমস্যা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রধানমন্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করার পরই তারা হোটেলের বাইরে তাদের অবস্থান ত্যাগ করে।’
বাংলাদেশ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক (ডব্লিউবি) অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশ্বব্যাংকের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৮ এপ্রিল শেখ হাসিনা ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছান। স্পিচরাইটার বলেন, ’নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসার সময় প্রধানমন্ত্রী হোটেলের বাইরে প্রচণ্ড ঠান্ডা ও বৃষ্টির মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের একটি গ্রুপকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখতে পেয়ে তিনি তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা যা বলতে চায়, এখানে এসে তাদের তা বলতে দাও।’
বিক্ষোভকারীদের হোটেলে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রীর পিএস-২ এবং সেখানকার বাংলাদেশ মিশনের আরও একজন কর্মকর্তা তাদের হোটেলে আমন্ত্রণ জানাতে যান।