প্রত্যেকটি মানুষের মনেই যদি ভালোবাসার সম্পর্কের প্রতি কদর থাকে, তাহলে অনেকেই কেন পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন? কেনই বা সঙ্গীকে প্রতারণা করেন অনেকেই? এই প্রশ্নের উত্তর বারবার খোঁজার চেষ্টা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বায়লোজকিাল অ্যানথ্রোপলজিস্ট হেলেন ফিশার এই বিষয়ে বলেছিলেন, ভালোবাসা শুধুই অনুভূতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিক ভাবে জড়িত নয়। বরং, এতে আমাদের মস্তিষ্কের ভূমিকা থাকে অনেক বেশি। প্রথমেই যৌন চাহিদা গুরুত্ব পায়। তারপর রোম্যান্টিক লাভ এবং শেষে সঙ্গীর সঙ্গে সংযোগ, এই দুই বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
লাইফ এবং সোল কোচ রামন লাম্বার মতে, এক একজন এক একরকমভাবে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে দেখে থাকেন। কেউ নিজের ভালো থাকার জন্যে এই ধরনের সম্পর্কে জড়াতে চান, কেউ আবার জীবনের দুশ্চিন্তা কমানোর জন্যে পরকীয়া প্রেমকেই বেছে নেন। এরকমই পাঁচ কারণকে গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ।
শুধুমাত্র মোহ
পরকীয়ার আড়ালে সবথেকে বড় কারণ বলে মনে করে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। দুজন মানুষ শুধুমাত্র শারীরিক আকর্ষণ থেকেই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাঁদের নিজের সঙ্গীকে ছেড়ে আসার কোনও পরিকল্পনা থাকে না। শুধুমাত্র যৌনতা উপভোগ করার জন্যেই এই ধরনের সম্পর্কে জড়ান তাঁরা। প্রথমে অনুভূতির মুখোশ পরা থাকলেও, তার পিছনে লুকিয়ে থাকে এই মোহই!
অনুভূতিকে গুরুত্ব দেন
পরকীয়া প্রেমে যৌনতা গুরুত্ব পেলেও কিন্তু অনেক যুগলের ক্ষেত্রে ছবিটি হয় একটু ভিন্ন। তাঁদের মধ্যে কোনও শারীরিক সম্পর্ক থাকে না। শুধুই নিজের অনুভূতির শূন্যতা পূরণ করতে চান তাঁরা। একে অপরকে ভালোবাসার মেসেজ পাঠান। ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। একে অপরের উপর মানসিক নির্ভরতাও তৈরি হয়। তার মানে এই নয় যে, তাঁদের একে অপরের প্রতি কোনও শারীরিক আকর্ষণ থাকে না! কিন্তু এক্ষেত্রে সেটি কম গুরুত্ব পায়।
প্রতিশোধ নিতে চান
সঙ্গীর দ্বারা প্রতারিত হওয়ার পরে অনেকেই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক শুরু করার কথা ভাবেন। সঙ্গী দিনের পর দিন অবহেলা করলেও তাঁদের মধ্য়ে দ্বিতীয় সম্পর্ক শুরু করার প্রবণতা দেখা যায়। কারণ, তাঁরা অন্য কারও থেকে গুরুত্ব পেতে চান এবং সঙ্গীকে দেখিয়ে দিতে চান যে, কোনওভাবেই তাঁকে অবহেলা করা যায় না!
কল্পনা করতে শুরু করেন
অনেক সময়ই আমরা কল্পনায় নিজেদের চাহিদা পূরণ করে নিই বা পূরণের চেষ্টা করি। এই ধরনের সম্পর্কে সেরকম প্রবণতা দেখা যায়। আপনার হয়তো কোনও সহকর্মী বা বন্ধুকে পছন্দ। তিনিও আপনার সঙ্গে বেশ কথাও বলেন। আপনি মনে করতে শুরু করেন যে, আপনাদের দুজনের মধ্য়ে কোনও সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এই ভাবনা আপনাকে আনন্দ দেয়।
মনের মানুষ খুঁজে পান
রিলেশনশিপ কোচ মধু কোট্যার মতে, এই ধরনের সম্পর্ক সত্যিই জটিলতা তৈরি করতে পারে। এই সম্পর্কগুলি অন্যান্য ‘আসল সম্পর্কের’ মতোই হয়। দুজন মানুষ একে অপরকে সত্যিই খুব ভালোবাসেন। তাঁদের একে অপরের উপর মানসিক নির্ভরতাও তৈরি হয়। শারীরিক সম্পর্কও থাকে। একে-অপরকে ছাড়া জীবন কল্পনাও করতে পারেন না। এমনকী একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাতেও তাঁদের ভালো লাগে।এই সময়ে বিবাহিত জীবনের উপরেও প্রভাব পড়ে। এমনকী বিয়ে ভেঙেও যেতে পারে।
প্রতিবেদন প্রকাশিত : এই সময়