নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগের ১৫ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিল ভোটবিহীন (ম্যানেজিং ) সিলেকশান
পরিচালনা কমিটি। অধিকাংশক্ষেত্রে
এসব কমিটি করেছেন রমরমা নিয়োগ বাণিজ্যে। স্থানীয়রা জানান, টাকা দেবেন নিয়োগ পাবেন। দল বুঝি না টাকা বুঝি। এনটিআরসি সিলেকশান বুঝি না আমাদের সিলেকশান চূড়ান্ত। এই নিয়মে চলেছে সিংহভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে নিয়োগের রিমোট কন্ট্রোল ছিল সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর হাতে। কিন্ত্ত আর্থিক লেনদেনের ক্যাশিয়ার ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন,সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদিপ সরকার, বাধাইড় ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও আবুল বাসার সুজন। সিন্ডিকেট ছিল ৪ স্তরের। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস,
উপজেলা শিক্ষক সমিতি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ পরিচালনা কমিটি। সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুণগত মানসম্পন্ন
লেখা-পড়ার চেয়ে আওয়ামী লীগ মতাদর্শী সিলেক্টেড পরিচালনা কমিটির সদস্যরাই ছিল সর্বেসর্বা। এমনকি স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা হাই স্কুল ও মাদ্রাসার সভাপতি পদে বিগত ১৬ বছর বারবার থাকার ইতিহাস রচনা করেছে বলেও আলোচনা রয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, তানোরে ১৪টি কলেজ, ১টি কারিগরি কলেজ,১টি সরকারি পলিটেকনিক্যাল কলেজ, ৬৭টি হাই স্কুল,২৮টি দাখিল মাদরাসা ও ১৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।স্থানীয়দের ভাষ্য, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতিসহ অন্যান্য সকল সদস্য আওয়ামী মতাদর্শী ছিল। প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ স্টিয়ারিং ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেধাহীন চাটুকার, আওয়ামী লীগ পদবিধারী ও সমর্থিত অধিকাংশ প্রধান শিক্ষকরা। এমনকি জনবল কাঠামো ছাড়াও গেস্ট টিচার বা কর্মচারী নিতেও দলীয়করণ এবং অর্থ নিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। অনিয়মে ভরপুর এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন সুফল মিলেনি। উপরোন্ত অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে অত্যাচার নির্যাতন ও হেনস্থার খড়গ
নেমে আসারও কথাও মানুষের মুখে মুখে আলোচনা রয়েছে। হাতেগোনা
কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যতিত অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডামি অভিভাবক সদস্য নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন বছরের পর বছর। অধ্যক্ষ-
প্রধান শিক্ষকের ছত্রছায়ায় স্বয়ং আওয়ামী লীগ নেতা চর দখলের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদ দখল করে নেওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। এমন অনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করেছেন উপজেলার কাঠালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম।এ বিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে জনৈক অভিভাবক অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক
রবিউল ইসলামের ক্ষমতার দাপটের কাছে অভিযোগকারি নিজেই হেনস্থা হয়েছেন বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। কিন্ত্ত গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে বিদ্যালয় আসা বন্ধ করে দিয়েছে প্রধান শিক্ষক।এতে প্রশাসনিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক এ প্রতিবেদককে জানান।
স্থানীয় সুত্র জানায়, উপজেলার সরনজাই হাই স্কুল, বিল্লী স্কুল এ্যান্ড কলেজ, দরগাডাঙা স্কুল এ্যান্ড কলেজ,চাঁন্দুড়িয়া স্কুল এ্যান্ড কলেজ,মালশিরা হাইস্কুল, হাতিশাইল হাইস্কুল,বনগাঁ চক রহমত হাই স্কুল, তালন্দ হাইস্কুল,নারায়নপুর হাইস্কুল, মোহাম্মদপুর হাইস্কুল, চাঁদপুর দাখিল মাদরাসা, অমৃতপুর দাখিল মাদরাসা,
দেউল দাখিল মাদরাসা ও জুমারপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ে সিলেকশন পরিচালনা কমিটির নিয়ন্ত্রণে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ ও নিরাপদ ক্ষমতা ভোগের তদন্ত চায় স্থানীয় অভিভাবক ও সুশীল সমাজ বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
Post Views: ১০৪
Like this:
Like Loading...
Related