তাফসীর: আলাহ তা’আলা স্বীয় নবী (সঃ)-কে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ তুমি কিয়ামত অস্বীকার কারীদেরকে প্রশ্ন করঃ আল্লাহ্ তা’আলার কাছে তোমাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিন, না আসমান, যমীন, ফেরেশতা, জ্বিন ইত্যাদি সৃষ্টি করা কঠিন?
হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ)-এর কিরআতে (আরবী) রয়েছে। ভাবার্থ এই যে, তারা তো এসবের সত্যতা স্বীকার করে, তবে মৃত্যুর পর পুনর্জীবনকে তারা কেন অস্বীকার করে? অন্য আয়াতে রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “অবশ্যই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করা মানব সৃষ্টি করা অপেক্ষা কঠিনতর, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানে না।” (৪০:৫৭)।
অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ আমি তাদেরকে আঠাল মাটি হতে সৃষ্টি করেছি। মুজাহিদ (রঃ), সাঈদ ইবনে জুবাইর (রঃ) এবং যহাক (রঃ) বলেন। যে, মানুষকে এমন মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে যা হাতের মাঝে আঠালভাবে লেগে যায়।আল্লাহ পাকের উক্তিঃ হে নবী (সঃ)! তুমি তো বিস্ময়বোধ করছে আর তারা বিদ্রুপ করছে। কারণ তারা কিয়ামতকে অস্বীকার করে, আর তুমি তাতে দৃঢ় বিশ্বাসী। আল্লাহ্ তা’আলা খবর দিচ্ছেন যে, মানুষের মৃত্যুর পর তাদের গলিত দেহ পুনর্গঠন করা হবে, এ শুনে তারা তামাশা করছে।
আর যখন কোন প্রকাশ্য প্রমাণ তাদের সামনে পেশ করা হয় তখন তারা বিদ্রুপ করে বলে যে, এটা তো নিচক যাদুর খেলা। তারা বলেঃ মৃত্যুর পর আমরা মাটিতে মিশে যাবো এবং এরপর পুনরুজ্জীবিত হবো, এমন কি আমাদের পূর্বপুরুষদেরও পুনরায় জীবিত করা হবে, এ কথা তো আমরা কখনো মানতে পারি না। তাদের এ কথার জবাবে আল্লাহ তা’আলা স্বীয় নবী (সঃ)-কে বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি তাদেরকে বলে দাওঃ তোমরা যে অবস্থাতেই থাকো না কেন তোমাদেরকে অবশ্যই পুনর্জীবিত করা হবে। কারণ তোমরা সবাই আল্লাহর ক্ষমতাধীন। তাঁর সামনে কারো কোন অস্তিত্ব নেই। যেমন আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “প্রত্যেকেই তাঁর কাছে লাঞ্ছিত অবস্থায় আসবে।”(২৭:৮৭)
আরো বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “নিশ্চয়ই যারা আমার ইবাদতের ব্যাপারে অহংকার করবে, সত্বরই তারা লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”(৪০:৬০)এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ্ বলেনঃ এটা তো একটিমাত্র প্রচণ্ড শব্দ, আর তখনই তারা প্রত্যক্ষ করবে। অর্থাৎ যেটাকে তোমরা খুবই কঠিন মনে করছো তা আল্লাহর কাছে মোটেই কঠিন নয়, বরং খুবই সহজ। একটিমাত্র প্রচণ্ড শব্দ হবে, আর তখনই সবাই কবর হতে বের হয়ে কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা প্রত্যক্ষ করবে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।