‘হাসিনাকে চুপ করাতে হবে’, ভারতকে চিঠি দিয়ে বলল বাংলাদেশ, অশান্তির পর তলব রাষ্ট্রদূতকেও

বুধবার রাত থেকে বাংলাদেশের ধানমন্ডিতে যে অশান্তি হচ্ছে, তার জন্য ভারতে বসে হাসিনার মন্তব্যকেই দায়ী করেছে ঢাকা। হাসিনাকে থামানোর অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে নয়াদিল্লিকে।

ভারতে বসে বসে ‘উস্কানিমূলক বিবৃতি’ দিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে বিরত করতে হবে। ভারতকে এই মর্মে চিঠি দিল বাংলাদেশ। মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার তলব করল ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় উপরাষ্ট্রদূতকেও। তাঁকে এ বিষয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
তৌহিদ বলেন, ‘‘হাসিনা ভারত থেকে যে সমস্ত বক্তৃতা করছেন, ছাত্র-জনতা তা ভাল ভাবে নিচ্ছেন না। তিনি অবিরাম উস্কানি দিচ্ছেন। তিনি যদি এই ধরনের ঘটনা থেকে বিরত থাকতেন, তবে অশান্তি হত না। গত কয়েক দিনের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা ভারতকে প্রোটেস্ট নোট দিয়েছি। লিখিত ভাবে জানিয়েছি। এখনও তার জবাব পাইনি। এখন রাষ্ট্রদূত নেই, আমরা উপরাষ্ট্রদূতকে ডেকে এ বিষয়ে অনুরোধ করেছি। যাতে হাসিনা উস্কানিমূলক মন্তব্য করা বন্ধ করেন, তা নিশ্চিত করার কথা বলেছি।’’
ধানমন্ডির এই বাড়িতেই ৫০ বছর আগে সপরিবারে খুন হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, ধ্বংস করা হল সেই স্মৃতি
বুধবার রাত থেকে বাংলাদেশের একাংশে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে। ঢাকার ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩২ নম্বরের বাড়িতে প্রথমে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে ক্রেন দিয়ে ওই বাড়ি গুঁড়িয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ধানমন্ডিতে হাসিনার বাড়ি সুধা সদনেও। বুধবার রাতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী প্রচার করেছিল আওয়ামী লীগ। তার পর থেকেই অশান্তি শুরু হয়। হাসিনা-বিরোধীরা ধানমন্ডিতে জমায়েত করেন এবং মুজিবের বাড়িতে ভাঙচুর শুরু হয়। হাসিনার ভাষণ শুরুর আগেও ওই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে সেই অশান্তির আঁচ লাগে। ভাঙচুর চলতে থাকে। দুপুরে সে প্রসঙ্গে আলোচনার জন্য ভারতীয় উপরাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়।

গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে গণ আন্দোলনের চাপে পড়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন হাসিনা। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং ভারতে আশ্রয় নেন। সেই থেকে হাসিনা ভারতেই গোপন আস্তানায় রয়েছেন। তাঁর প্রত্যর্পণ চেয়ে ইতিমধ্যে দিল্লিকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। চিঠি গ্রহণও করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে ভারত সরকার অবস্থান স্পষ্ট করেনি।

Exit mobile version