এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: গত ৭ মাস ধরে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ১৯ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত হেলথ কেয়ার প্রভাইডাররা (সিএইচসিপি) মাসিক বেতন পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন তারা। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁরা অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন । কবে নাগাদ বেতন পেতে পারে এই বিষয়ে কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি।
জানা যায়, গ্রামের দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও জটিল রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ প্রদান কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন ছিল মূল উদ্দেশ্য। কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপিরা গত ২০১১ সালে এ প্রকল্প শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ১৪ জুনে মেয়াদ শেষ হয়। এরপর তিন দফা প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও বেতন বৃদ্ধি হয়নি এক টাকা। কিন্তু গত বছরের জুলাই মাস থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন বকেয়া পড়ে। এই অবস্থায় ঢাকায় আন্দোলনে গত বছরের ২০ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার সিএইচসিপিদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের আশ্বাস দেয়। কিন্তু এ আশ্বাসের পরও প্রকল্প বা রাজস্ব খাত কোনোটা থেকেই তাঁদের বেতন-ভাতা ছাড় করা হয়নি। এতে সাত মাস ধরে তাঁরা কোনো বেতন পাননি, এমনকি প্রণোদনা ভাতাও পাননি তাঁরা।
উপজেলার হোসেনপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধিতে
বর্তমান সময়ে আমাদের সামান্য বেতন দিয়ে খুব কষ্টে সংসার চালাই। তারপর আবার গত সাত মাস থেকে সেটিও বন্ধ। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়ে গেছি। অনেক সিএইচসিপি বেতন ভাতা না হওয়ার দূচিন্তায় ষ্ট্রোক করে মৃত্যু বরন করেছেন। দ্রুত এর সমাধান দরকার কেননা নিরুপায় হয়ে গেছি।
কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) এসোসিয়েশন জেলা শাখার সভাপতি মোরশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, জেলার ৩১৫ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিদের একই অবস্থা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিয়মিত যোগাযোগ করেও কোন সুরাহা পাচ্ছি না। হচ্ছে, হবে বলেই দিন পার হচ্ছে। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ আমাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে দ্রুত বেতন প্রদানের জন্য অনুরোধ করতেছি।
এবিষয়ে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, সিএইচসিপিদের বেতন বন্ধ থাকায় আমরা ব্যথিত। এটি সারাদেশেই একই চিত্র। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিয়মিত অবগত করা হচ্ছে।