কিডনি ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভায় বক্তারা ‘প্রতিকার ও প্রতিরোধই কিডনি রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়’
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ১৩ মার্চ ২০২৫ কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে ১০ বৎসর পূর্বে কিডনি রোগী ছিল ১৮ ভাগ, ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৪ ভাগ। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়া এর প্রধান কারন। ২০১১ সালে ডায়াবেটিসের রোগী ছিল ৮০ লাখ, যা ২০১৮ সালে বেড়ে দাড়িয়েছে ১ কোটি ১০ লাখে। তেমনি ২০১১ সালে উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ, বর্তমানে বেড়ে হয়েছে ২ কোটির উপরে। এসব রোগের কোন উপসর্গ না থাকাই প্রধান সমস্যা। ফলে রোগীরা চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নেবার প্রয়োজন মনে করেন না। গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ৪০ ভাগ মানুষ জানেন না তার ডায়াবেটিস আছে আর ৬০ ভাগ মানুষ জানেন না তারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। ৯০ ভাগ মানুষ জানেই না তাদের প্রস্রাব দিয়ে আমিষ নির্গত হয়। এর ফলে নিজের অজান্তেই তারা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ) আক্রান্ত হচ্ছেন। তখন পরীক্ষা নিরিক্ষায় দেখা যায়, দুটো কিডনিই ৭০-৮০ ভাগ বিকল হয়ে পড়েছে। এই পর্যায়ে চিকিৎসা করে কিডনি বিকল রোগের অগ্রগতি কমানো সম্ভব হয় না। ফলে ৫-৬ বৎসরের মধ্যে ওই রোগীদের দুটো কিডনিই ৯০ ভাগের উপর বিকল হয়ে যায়। মূলত উপসর্গ না থাকায় তারা বিশ্বাসই করেন না যে, তাদের দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই কিডনি রোগ থেকে বাঁচতে হলে প্রতিকার ও প্রতিরোধই একমাত্র উপায়। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিস এসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিপার্টমেন্ট অফ এপিডেমিওলজি এন্ড রিসার্চের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিচার্স ইনস্টিটিউটের মেজর জেনারেল (অব:) অধ্যাপক জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন রুবেল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনী ফেরদৌস রশিদ প্রমূখ। জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, বর্তমানে দেশে ১ কোটির উপরে ডায়াবেটিস রোগ রয়েছে এবং এদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের সম্মিলিন প্রচেষ্টার মাধ্যমে একে রোধ করা দরকার। অধ্যাপক ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার নন কমিউনিকেবল ডিজিজের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে এবং কিছু কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি জেলায় ১০ বেডের ডায়ালাইসিস ইউনিট চালুর পরিকল্পনা করা রয়েছে। অধ্যাপক হারুন আর রশিদ বলেন, কিডনি রোগের প্রধান তিনটি কারণের মধ্যে প্রথম ডায়াবেটিস, দ্বিতীয়ত উচ্চরক্তচাপ এবং তৃতীয় কারণ নেফ্রাইটিস। দেশে নেফ্রাইটিস দিন দিন কমলেও অসংক্রামক রোগ ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপের রোগী বাড়ছে আশংকাজনকহারে।