আমাদের দেশে সাধারণত বয়স্ক মানুষ হজ্জে যায়। বেশিরভাগ হজ্জ যাত্রীর জন্য, ওটাই তার একমাত্র বিদেশ ভ্রমণ। দেশে ফিরে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের গল্প বলে। যাদের কাছে গল্প বলে, তাদের অনেকে কখনো ঢাকা শহরও দেখেনি।
তেমনই একজন হজ্জ ফেরত মুরব্বীকে এলাকার লোকজন জিজ্ঞাসা করছে – সৌদী আরবের মানুষ কথা বলে কেমন? মুরব্বী উত্তর দিলেন – সবকিছুই আরবীতে বলে ; কিন্তু আজান ও সালাম বাংলায় বলে।
তেমনই একজন মুরব্বী এই কথাটি বলেছেন – সৌদী আরবের মানুষ সুন্নত নামাজ পড়ে না। মুরব্বী দেখেছেন, সৌদী আরবের মানুষ মসজিদের ফরজ নামাজ শেষ হলে সুন্নত না পড়েই দ্রুত চলে যায়। তিনি যেটা দেখেছেন, সেটাই বলেছেন।
মুরব্বী দেখেছেন, সৌদী আরবে আজান হলে, লোকজন দোকান ফেলে রেখে মসজিদে দৌড় দেয়। মুরব্বী সেই গল্প বলেন নি। মুরব্বী দেখেছেন নামাজের সময় রাস্তা একেবারে ফাকা হয়ে যায়। তিনি সেই গল্প বলেন নি। তিনি দেখেছেন, সবাই মসজিদে গিয়ে ফরজ নামাজ পড়ে। তিনি সেই গল্প বলেন নি।
মুরব্বী যদি সেসব গল্প বলেও থাকেন, লোকজন সেটা মনে রাখেনি। লোকজন শুধুমাত্র একটি গল্প মনে রেখেছে – সৌদী আরবের লোকজন সুন্নত নামাজ পড়ে না।
প্রথম কথা : ফরজ নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য অবশ্যই করণীয়। কাজকর্ম ফেলে মসজিদে দৌড় দিতে হবে।
দ্বিতীয় কথা : সুন্নত নামাজ বাধ্যতামূলক নয়। তাছাড়া, ঘরে বসে, সময় নিয়ে, একাকী পড়ার জন্য সুন্নত নামাজ বানানো হয়েছে। মসজিদে সুন্নত না পড়লেও চলে।
আসল কথা : লোকজন কাজ ফেলে দৌড়ে মসজিদে এসেছে। কেউ দোকান খোলা রেখে এসেছে। বাধ্যতামূলক (ফরজ) নামাজ পড়েছে। কিন্তু, ঐচ্ছিক (সুন্নত) নামাজ পড়ার সময় নেই। দ্রুত ফিরে যায়।
সৌদী আরবের মানুষ সুন্নত নামাজ পড়ে না। সেটা জানার আগে, এই কথাটি জানুন – সৌদী আরবের মানুষ সবাই কাজ ফেলে মসজিদে গিয়ে ফরজ নামাজ পড়ে। তারা মাঝে মাঝে বাসায় সুন্নত নামাজ পড়ে।
সবশেষে আরেকটি কথা জানুন – নামাজ না পড়া মুসলমান শুধুমাত্র বাংলাদেশে পাওয়া যায়। এমনকি, ভারতেও নামাজ না পড়া মুসলমান নেই।