ধর্মপাশা প্রতিনিধিঃ
ধর্মপাশা উপজেলার কালীজানা গ্রুপ জলমহালটি থেকে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে মাছ শিকার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই জলমহালটি থেকে অবৈধভাবে মাছ শিকার বন্ধে এ নিয়ে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের জেলে বাবলু মিয়া (৩৪) রবিবার (৩সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনওর) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালীজানা গ্রুপ জলমহালটি ১৪২৯থেকে ১৪৩৪বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ছয়বছরের জন্য বাৎসরিক ৯৩লাখ টাকা ইজারামুল্যসহ অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধ সাপেক্ষে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের ভাটাপাড়া উদয়ন মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বেনু মিয়ার অনুকুলে এটি ইজারা দেওয়া হয়। ১৪৩০বঙ্গাব্দের সাড়ে চারমাস অতিবাহিত হলেও এখনো জলমহালটির ইজারামুল্যসহ অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধ করা হয়নি।
উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের মৎস্যজীবি বাবলু মিয়া বলেন,কালীজানা গ্রুপ জলমহালটির সীমানার বাইরেও আমাদেরকে মাছ ধরতে দেওয়া হচেছ না। আমাদের ইউনিয়নের উত্তর বীর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নূর হোসেন সাহেবের ছেলে সোহেল মিয়া (৩৫) ও জলমহালটির ইজারাদার বেনু মিয়া (৫৭) মিলে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কালীজানা গ্রুপ জলমহালে লোকজন নিয়োজিত করে সেখান থেকে লাখ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করে সেই টাকা তারা নিজেরা মিলেমিশে হাতিয়ে নিচেছন। এ অবস্থায় সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচেছ। জলমহালটি থেকে অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ বন্ধে আমি ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের ভাটাপাড়া উদয়ন মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বেনু মিয়ার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে জলমহালটিতে অর্থনৈতিক ব্যবসায়ী অংশীদার দাবি করে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সোহেল মিয়া বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে কালীজানা গ্রুপ জলমহাল থেকে অবৈধভাবে মাছ শিকার করার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। যাতে অবৈধভাবে কেউ এই জলমহালটি থেকে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য আমরা পাহারাদার নিয়োজিত রেখেছি। নানাবিদ সমস্যা থাকায় যথাসময়ে জলমহালটির খাজনা ও অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। গত ১৬আগস্ট জলমহালটির খাজনার পরিশোধের জন্য দুই মাসের সময় চেয়ে উচ্চ আদালতে আমরা একটি রিট পিটিশন করেছি। আদালত থেকে এক মাসের মধ্যে দুই কিস্তিতে খাজনা পরিশোধ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সময় এখনো শেষ হয়নি।
সেলবরষ ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফরিদ খোকার সঙ্গে আমাদের পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ রয়েছে। তাই তিনি তাঁর লোকজন দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বদনাম রটিয়ে আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্ঠা চালিয়ে আসছেন। সেলবরষ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম ফরিদ খোকা বলেন, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কালীজানা গ্রুপ জলমহাল থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নূর হোসেন সাহেবের সন্তান সোহেল মিয়ার নেতৃত্বে সেখানে অবৈধভাবে মাছ শিকার করা হচেছ। আমি বিষয়টি নিয়ে ইউএনও এবং অ্যাসিল্যান্ড স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অ্যাসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অলিদুজ্জামান বলেন, অবৈধভাবে কালীজানা গ্রুপ জলমহাল থেকে মাছ শিকার করার ঘটনাটির সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Post Views: 308
Like this:
Like Loading...
Related