স্টার আনন্দ প্রতিবেদক : দীর্ঘ একটা সময় ধরেই ঢালিউডের বর্তমান সময়ের একমাত্র সুপারস্টার নায়ক শাকিব খানের সময় ভালো যাচ্ছে না। একটার পর একটা ঘটনা নিয়ে সমালোচনায় আসছেন এই তারকা। এর মধ্যে উটকো ঝামেলা হয়ে সামনে এসেছে শাকিব খানের অস্ট্রেলিয়া সংক্রান্ত ঘটনা। অর্ধযুগ আগের ঘটনায় শাকিবের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, মিথ্যা আশ্বাস ও ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছেন রহমত উল্লাহ নামের অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক প্রযোজক। তাই তো এটা এখন টক অব দি কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। এটা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা – সমালোচনা। এরই মাঝে শাকিব খান ওই প্রযোজকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে তার পাল্টা অভিযোগ – ওই প্রযোজক একজন মিথ্যাবাদী। একজন প্রতারক।
অন্যদিকে, গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে শাকিব খানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের একটি রিপোর্ট। সেখানে অ্যানি সাবরিন নামের এক নারী অভিযোগ করেছেন – শাকিব খান তাকে শাকিব ধর্ষণ করেছেন। এই ঘটনায় অনেকেই শাকিবের মুন্ডুপাত করছেন, অনেকে আবার তার পাশে দাঁড়াচ্ছেন। স্বামী শাকিবের এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন তার বর্তমান স্ত্রী বুবলী। তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে স্বামীর পাশে দাঁড়ালেন।
বুবলী তার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া দীর্ঘ পোস্টে বেশকিছু প্রশ্ন রেখেছেন। জানতে চেয়েছেন সাকিবকে নিয়ে এতো অভিযোগ আগে কোথায় ছিল ? মধ্যরাতে শাকিবের হোটেলে ওই নারীই বা কী করছিলেন – এটা প্রশ্ন তুলেছেন বুবলী।
নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে দেওয়া পোস্টের শুরুতেই বুবলী লেখেন, শাকিব খান একজন অভিনয়শিল্পী যে কিনা প্রায় ২৪ বছর এই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করেছেন, অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন, অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সিনেমা নিয়ে ভেবেছেন। হঠাৎ করে বিভিন্ন ধরনের ইস্যু এনে তাকে নিয়ে নানান বিতর্কের সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি অভিযুক্ত ছবি ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ও শুটিং চলাকালীন কিছু ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছেন। তাতে তিনি লেখেন, অনেক বছর আগের অপারেশন অগ্নিপথ নামের একটি সিনেমার শুটিং চলাকালীন শাকিব খান এর ব্যাপারে বিস্তর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে প্রডিউসার দাবি করে এক ব্যক্তি তাকে নিয়ে নানান অভিযোগ করছেন। আচ্ছা শুটিং চলাকালীন এতো এতো অভিযাগ যখন টের পেয়েছিলো উনারা, তাহলে কেনো তখন তাকে বাদ দেয়া হলো না ? সমিতিগুলোতে অভিযোগ করা হলো না ? দু-পক্ষের কথা শোনা হলো না ?
শাকিবের পর্দা জীবনের সফল সঙ্গী ও ব্যক্তিগত জীবনের স্ত্রী বুবলী আরও লেখেন, ২০১৬ সালের অস্ট্রেলিয়ায় অপারেশন অগ্নিপথ শুটিং এর পর ২০১৮ সালে শাকিব খান তার সুপার হিরো নামের আরেকটি সিনেমার শুটিং সম্মানের সাথে প্রায় ২০ দিনে অস্ট্রেলিয়া থেকে শেষ করে আসেন। উনি যদি কোনো ব্যাপারে গিল্টি থাকতেন তাহলে তো অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ তাকে তখন শুটিং এর অনুমতই দিতো না। শাকিব খান নিজেও অস্ট্রেলিয়া যেতেন না। অভিযোগকারী সেই নারী মধ্যরাতে শাকিবের হোটেলে কী করছিলেন সেই প্রশ্ন তুলে ধরে তিনি আরও লেখেন, মধ্যরাতে তার হোটেল রুমে নারী সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে এখন বলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো মধ্যরাতে তার হোটেল কক্ষে তিনি কী করছিলেন ? সেদিন কী তার বা তাদের উদ্দেশ্য ছিল ? এছাড়া এতো বছর কেনো ওসব ঘটনা নিয়ে সেই নারী প্রকাশ্যে কথা বললেন না! এখন কেনো এই প্রডিউসার দাবি করা ব্যক্তি অস্থির হয়ে গেলেন ? আর দেশে হোক বা বিদেশে! যে কেউ যে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারে, খাতায় নাম উঠতেই পারে, কিন্তু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, উভয় পক্ষের প্রমানাদি নিয়ে।
নিজের স্ট্যাটাসের একদম শেষের দিকে বুবলী আরও লেখেন, কথা হলো, হঠাৎ এতো অভিযোগের ভান্ডার কেনো ? কী চাচ্ছে ? শিডিউল ? মুভি শেষ করে দেয়া ? আমার জানা মতে শাকিব খান অপারেশন অগ্নিপথের শিডিউল কয়েকবারই দিয়েছেন, কিন্তু শুটিং হয়নি। এখনও যদি শিডিউল চাওয়া হয় সিনেমা শেষ করতে, উনি অবশ্যই শিডিউল দিবেন, কারন তিনি পেশাগত জায়গায় যথেষ্ট ডেডিকেটেড, তা নাহলে ২৪ বছর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারতেন না কারন একজন সফল শিল্পী একদিনে তৈরি হয়না। সবশেষ শাকিব খানকে নিয়ে চক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, কয়েক বছর ধরে দেখছি, একটা চক্র কিছুদিন পর পরই শাকিব খানকে নিয়ে ওঠেপড়ে লাগে। নানা চক্রান্তে মেতে ওঠে। বিষয়টা যেন এমন, তাকে হটিয়ে দিতে পারলেই আমরা রাজা। কিন্তু তার লাখো কোটি ভক্তরা কখনোই তা হতে দেয়নি। দিবেও না। সবসময়ই তারা তাকে আগলে রাখে। শক্তি দিয়ে এগিয়ে নেয়। মনে রাখবেন রাজা সবসময়ই রাজা।
