প্রতিবেদক: শীতের শুরুতেই বাজারে এসেছে নতুন আলু। তবে দাম চড়া। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। নতুন আলুর পাশাপাশি বাজারে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শিমের সরবরাহও বেড়েছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অবশ্য এর মাঝে ডিম ও মুরগির দাম কিছুটা কমেছে।
আজ (শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখে গেছে, শীত পড়তে শুরু করলেও এখনও বেশিরভাগ সবজির আগের মতোই দাম রয়ে গেছে। তবে কয়েক মাস ধরে যেমন চড়া দামে সবজি বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে কিছুটা কমেছে।
বাজারে সিম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, গাঁজর ৮০ টাকায়, করলা ৬০ টাকায়, বাঁধা কপি ৪০ টাকায় (প্রতি পিস মাঝারি), ফুলকপি ৫০ টাকায় (প্রতি পিস মাঝারি), মূলা ৪০ টাকায়, নতুন আলু ৮০ টাকায়, সাধারণ আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, বরবটি ৬০ টাকায়, বেগুন ৫০ টাকায়, টমেটো ১৪০ টাকায়, ঢেঁড়স ৬০ টাকায়, শসা ৪০ টাকায়, পেঁপে ৩০ টাকায়, শালগম ৬০ টাকায়, পটল ৬০ টাকায়, পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় এবং ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল আলিম। তিনি বলেন, শীত প্রায় চলে এসেছে তবু বাজারে সবজির দাম কমেনি। দুই-একটা ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম এখনও ৫০ টাকার বেশি। অন্য বছরগুলোতে এ সময় সবজির দাম বলতে গেলে প্রায় অর্ধেক ছিল। গত পাঁচ/ছয় মাস ধরে অতিরিক্ত দামে সবজি কিনতে হচ্ছে আমাদের। সবাই বলেছিল শীত পড়তে শুরু করলে এবং নতুন সবজি উঠলেই দাম কমে যাবে। কিন্তু এখনও চড়া দামেই সবজি বিক্রি হচ্ছে। আগের চেয়ে কিছুটা দাম কমেছে এ কথা ঠিক, তবে তা খুব বেশি কমেনি। অন্য বছরের তুলনায় এখনও বেশি দামেই সবজি বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
একই অভিযোগ করেন মিরপুর ৬ নম্বর কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসা গার্মেন্টস কর্মী নাজিম মিয়া। তিনি বলেন, শীতের সবজি ফুলকপির পিস এখনও ৪০- ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। পটল, বরবটি, ঢেঁড়স এখনো ৬০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। তাহলে সবজির দাম কমল কোথায়? শীতের সময় শুরু হয়ে গেছে। এ সময় সবজি অর্ধেক দামে বিক্রি হওয়ার কথা। তবুও দাম চড়া। অন্যবার এ সময় এসে ঠিকই কম দামে সবজি পাওয়া গেছে। এ বছর সেই তুলনায় সবজির দাম কমেনি। শুরুতে সিম বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজিতে। সেই হিসেব করলে সিমের দাম এখন কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু শীতের এ সবজি এখন ৩০/৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলে স্বাভাবিক বা দাম কম আছে বলে মনে হতো। কিন্তু এটি আমাদের কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকায়। যা আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের জন্য চড়া বলতে হবে।
শেওড়াপাড়া কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা খলিলুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাঁচ/ছয় মাস ধরে সবজির যে দাম গেছে সেই তুলনায় সব সবজির দামই কিছুটা কমেছে। তবে অন্য বছরে শীতের শুরুতে যেমন বাজার থাকে সেই তুলনায় এখনও সবজির দাম বেশি। পাইকারি বাজারে আমাদের বেশি দামে কেনা পড়ছে তাই খুচরা বাজারে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন সবজি উঠলে দাম আরো কমতে পারে।
অপরদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায়। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৯০থেকে ৩২০ টাকা।
গত সপ্তাহে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ফার্মের মুরগির ডিম এখন ৯০ টাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে। আর পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহের মতোই ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে টাকি মাছ। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। ১ থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায়। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়।