আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এদিকে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জামায়াত দল গোছানোর পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে।
জানা গেছে,গত ৫ আগস্টের পর বিএনপির রাজনীতিতে এখন মামলা, হামলা আর গ্রেফতারের ভয় না থাকায় প্রতিপক্ষ বিহীন অনুকূল পরিবেশ পেয়ে সারা দেশের ন্যায় মাঠে নেমেছে উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নিজেদের অবস্থান জানান দিতে বিএনপির বিভিন্ন নেতার নেতৃত্বে উপজেলা জুড়ে দেয়া হয়েছে একাধিক মটরসাইকেল শোডাউন। সেইসঙ্গে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে অভ্যন্তরীণ দলীয়কোন্দল (গ্রুপিং) বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
তৃনমুলের নেতাকর্মীরা বলছে, রাষ্ট্র ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা লাপাত্তা। এমন পরিস্থিতিতে তানোরের রাজনীতির মাঠে এখন বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে বিএনপি।
ফলে দিন যতই গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে বিভাজন। এই সুযোগে দল ভারী করতে নব্য বিএনপি ও অনুপ্রবেকারীরা দলে প্রবেশ শুরু করেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের প্রায় ১৭ বছরে যারা আঁতাত করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গা-বাঁচিয়ে চলেছে,অধিকাংশক্ষেত্রে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাদের প্রথম সারিতে দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে জৈষ্ঠ নেতাদেরও কোনো প্রয়াস নেই বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। এছাড়া প্রকাশ্যে দলীয় বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে ডাক পড়লে বিব্রতকর পরিস্থিতি ও নিজ দলীয় রাজনৈতিক রোষানলে পড়তে হচ্ছে তাদের। এমন অবস্থায় রাজনৈতিক পরিবেশ ফেরাতে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আহ্বান জানান তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ। রাজনৈতিক এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিএনপির নেতাদের পক্ষে বিপক্ষে নিজেদের অনুসারীদের দোষারোপ করতেও দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগষ্টের পর বিএনপি নেতা এ্যাডঃ সুলতানুল ইসলাম তারেকের কম্বল বিতরণ কর্মসুচিতে বাধা দেয়ায় মাদারীপুর বাজারে দুপক্ষের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হযরত আলী মাস্টারকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শামসুল ইসলামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।এমনকি তানোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড গুবিরপাড়া মহল্লায় একইদিন বিএনপির দুগ্রুপের পৃথক ইফতার ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে।অন্যদিকে গত ১১ মার্চ মঙ্গলবার পাঁচন্দর ইউপি বিএনপির ইফতার এবং দোয়া মাহফিলে দুগ্রুপের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির এমন কোন্দল-গৃহবিবাদে তৃণমুলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকগণ অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
অপরদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন পরিস্থিতিতে দলীয় কোনো কোন্দলে না গিয়ে নিরবে মাঠ গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছে তানোর উপজেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের নিয়ম নেমে বিভিন্ন মিছিল, মিটিং, দোয়া মাহফিল, শহীদদের অর্থ প্রদান ইত্যাদির কর্মসূচির মাধ্যমে জনমত গঠনে কাজ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী। জামায়াতের একাধিক নেতাকর্মী জানান, কোন কোন্দল ছাড়াই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাবে এমনটাই জানিয়েছেন জামায়াতের তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।এসব কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় জামায়াত অনেকটা এগিয়ে রয়েছে।
এবিষয়ে তানোর উপজেলা শাখার জামায়াতের সেক্রেটারি ডিএম আক্কাস আলী বলেন, আমাদের সংগঠনে কোন বিভক্তি নেই। আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা অনুসরণ করে সবাই এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এবিষয়ে তানোর উপজেলা বিএনপির এক জৈষ্ঠ নেতা বলেন, তানোরে একই দলের বিভক্তির কারণে কর্মী সমর্থকরা কিছুটা বিচলিত হচ্ছেন। অচিরেই বিভক্তি মিটিয়ে সকলকে এক সঙ্গে করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
Post Views: 139
Like this:
Like Loading...
Related